উৎসবের বর্ষবরণ
-রীণা চ্যাটার্জী
সুধী,
আরো একটি নতুন বর্ষবরণের সাক্ষী আমরা। গানে, বাজনায় আলোর বন্যায়, শব্দবাজির সমারোহে পুরাতনকে বিদায় জানালাম নাকি নতুনকে বরণ করে নিলাম? এইটুকু স্পষ্ট বোঝা গেল আনন্দ উৎসব হলো– নিয়ম মেনে। পরের দিনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উঠে এলো দূষণ পরিসংখ্যান। কতোটা শব্দদূষণ, কতোটা বায়ুদূষণ। পরিবেশবিদরা চিন্তিত হলেন দূষিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে। আমারা সংবাদপত্রে চোখ রেখে কেউ হাসলাম, কেউ ভ্রু কুঁচকোলাম। সাবধানীদের কপালে ভাঁজ পড়লো। তার্কিকরা বললেন দৃঢ় কণ্ঠে “একদিন তো! তাই বলে আনন্দ করবোনা? বাচ্চারা আনন্দ করবে না! এতে কতো গরীবের রুজি রোজগার হচ্ছে”- বেশ যুক্তিপূর্ণ কথাই বটে! অস্বীকার করি কোন পথে? গরীব-দরদী হলে তো আর কিছু বলার থাকে না, কিন্তু এই গরীব দরদীরা কেন গরীবদের কথা অন্যভাবে ভাবতে পারেন না? জানা নেই। ভবিষ্যতের কথা, অসুস্থ মানুষের কথা, নবজাতকের কথা সব বাদ দিলাম। নিজের সন্তানের জন্য এই উৎসবসামগ্ৰী যাঁরা বিকিকিনি করেন, তাঁরা কি নিজের সন্তানের ভয়াবহ ভবিষ্যতের কথা ভাবেন! ভাবতে পারলে মনে হয় না এই ক্ষতিকর আনন্দে মেতে উঠতে পারতেন। আশা রাখতে ক্ষতি নেই, আগামীর অভিভাবকরা এই বিষয়ে যত্নশীল হবেন। দূষণমুক্ত হবে ভবিষ্যত আনন্দ উৎসব।
কালের নিয়মে হলেও আমরা হারিয়েছি সাহিত্য সংস্কৃতি জগতের অনেক শ্রদ্ধেয় কান্ডারীদের। যাঁদের অভিভাবকত্বের ছায়ায় আমরা বড়ো নিশ্চিন্ত ছিলাম.. ছন্দপতনের ধ্বনি বড়ো বেদনাদায়ক। ব্যাথাতুর মনে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করি।
আলাপী মনে সাহিত্য আলাপনে কিছু মন ছোঁয়া কলম, ‘ইত্যবসায় তিন’, ‘চলে যেতে হবে’, ‘একান্তে তোমার জন্য’, ‘ভালো থেকো স্মৃতি’, ‘পুনর্বারের প্রতীক্ষায়’, ‘ন কাঠা’, ও আরো অনেক। কৃতজ্ঞতা স্বীকার সকল পাঠকবৃন্দ ও স্বজন সাথীর কাছে। শুভেচ্ছা, শুভকামনা রইলো নিরন্তর।
কঠিন কঠোর রূঢ় বাস্তব, এ সমস্ত কিছুর কোনোটাই অস্বীকার করার উপায় নেই আমাদের, তবু চোখ কান বুজে ভুল গুলো, অন্যায় গুলো আমরা প্রতিনিয়ত করে চলেছি অথবা সয়ে চলেছি, এক দিন ই তো বা কিছুক্ষন ই তো , এই বলে মন যে প্রবোধ দিয়ে। জানি না আর কবেই বা আমরা সত্যিকারের সচেতন হবো, কবে মনুষত্ত্ব নামক, বিবেক নামক বস্তুটি জাগ্রত হবে। লেখাটা সত্যিই অসাধারন….
দেখা যাক, বোধোদয় কবে হয় সবার। অপেক্ষায় থাকা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।